বনবিবির সম্পর্কে যতটুকু জেনেছি বনভূমির আধিপত্য দক্ষিণ রায়ের কাছ থেকে হস্তান্তরিত হয় বনবিবিতে। এই বন বিবির বাহন হিসেবে বাঘ , কুমির হরিন কে দেখা যায়। জল রাজ্যের অধিপতি কালু রায়ের সঙ্গে সেই অর্থে বনবিবির কোন বিরোধ ছিল না বরং বন্ধু ছিলেন। জলের দানব কুমির কল্পনায় কালু রায়েরই বাহন । বনবিবির বাহন হিসেবে মুরগি কেও দেখা যায় । বনবিবি বা বনদূর্গা দক্ষিণ রায় অর্থাৎ বাঘকে যুদ্ধে হারিয়ে ছিলেন। তাই বাঘকে বনবিবির বাহন হিসেবে দেখা যায় সব জায়গায়। কিন্তু হরিন বাহন কেন?
সুন্দরবনের বকুলতলা থানার হরিনবাহিনী বনবিবি সম্পর্কে, গবেষক সঞ্জয় ঘোষ বলছেন "দি রেভিনিউ হিস্ট্রি অফ সুন্দরবনস, ভলিউম টু বাই এফ ডি এস্কোলি্ ,পৃষ্ঠা ২১৬ বলা হয়েছে নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে সুন্দরবনে হরিন ধান ক্ষেতের খুব ক্ষতি করে।মনে হয় এ কারনে হরিনবাহিনী বনবিবি পূজা শুরু হয়।তবে এটা পর্যন্ত জানা তথ্য।হরিন যুক্ত নাম পাওয়া যায় দক্ষিন বারাসাতে রামরুদ্রপুর মৌজায় হরিনখালির বাদায় জেলার এ পর্যন্ত জানা সবার বড় বাঘ বাহিনী বনবিবি পূজা ও মেলা হয়।আমার গরু খোঁজ়া অনুযায়ী বনবিবির উৎস মেদিনীপুরের আদিবাসী সমাজের পূজিত বড়াম দেবী।এই বড়াম মেদিনীপুর আগত সুন্দরবনের আদি বসিন্দা দের বিশালাক্ষ্মী দেবীতে রুপান্তরিত হয় যখন তারা ট্রাইব থেকে কাস্ট বিবর্তিত হন।মুসলিম আগমনের পর এই বিশালাক্ষ্মী দেবী বনবিবিতে রূপান্তরিত হন মাত্র।তাঁর বাহন থাকে বাঘ।"
গবেষক কবি সমীরণ মন্ডল বলেছেন"বনবিবি পুজো কী ব্রিটিশ পরবর্তী সুন্দরবনে আবাদ করার সময় শুরু হয়ে থাকবে? মেদিনীপুর থেকে এই সংস্কৃতি আমদানি হলে মনে হয় তার আগে মেদিনীপুরের লোক সেভাবে আসেনি। গল্প অনুযায়ী বনবীবী স্বামী পরিত্যক্ত মহিলার সন্তান। পরে মা ফিরে গেলেও বন হরিণের দুধে পালিত হন বনবিবি সাহজঙ্গুলি। এখানে হরিণ আসতে পারে ধারক, বাহক, পালক হিসাবে। "
কুক্কুট বা মুরগী জাতীয় পাখি , গোধা , কুমীর , বাঘ, মহিষ , ষাঁড় সবই উমার বাহন হিসাবে এক এক সময় গৃহীত । এই গুলি বনবিবির বিবর্তনে কোন ভাবে বাদ দেওয়া যায়না । আঞ্চলিক প্রয়োজনে বাহন গুলি আঞ্চলিক দেবীদের ক্ষেত্রে গৃহীত হয় ।
সোদপুরের কর্নমাধবপুর অঞ্চলে অবস্থিত মা বনবিবি-র মন্দিরে। এই মন্দিরে কোন দেবী মূর্তি নেই। বনের পশুরাই দেবীর প্রতিকি হিসেবে পূজিত হয়। আর এখানে হরিন দেখা যায়।

বনবিবি বা বনদেবী বা ব্যাঘ্রদেবী একইসাথে হিন্দু ধর্মের দেবী ও বনবাসী মুসলমানদের পীরানি।বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের মধু আহরণকারী ও কাঠুরে জনগোষ্ঠী বাঘের আক্রমণ হতে রক্ষা পেতে বনবিবির পূজো করেন। দক্ষিণরায় (রায়মণি) হিংস্র বাঘের ছদ্মবেশে মানুষের উপর হামলা করে।মধু সংগ্রাহক, কাঠুরে, মৎসজীবী মানুষের দেবী বনবিবি, বাঘের তথা দক্ষিণ রায়ের হাত থেকে তাদের রক্ষা করবেন এই বিশ্বাসে পূজা করেন।
Nice post
ReplyDeleteLovely
ReplyDelete