Tuesday, 7 December 2021

মাটির লক্ষী ভান্ডার



 বিখ্যাত শহর থাংশান , এই  শহরটিকে মৃৎশিল্পের শহর বলা হয়। এই শহরটি।চীনের অন্যতম প্রাচীন শহর পেইচিং থেকে ১৫০ কি.মি. উত্তর-পূর্বে অবস্থিত  এই শহরের পথে-প্রান্তরে, বিনোদন কেন্দ্র বা পার্ক গুলোতে মৃৎ শিল্পের বিভিন্ন শিল্পকর্ম দেখতে পাওয়া যায়।  শহরের  প্রায় ৬০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস  আছে, থাংশানের মৃৎশিল্পের উৎপত্তি ও বিকাশের সূত্রপাত মিং রাজবংশের ইয়ুং লে এর সময়ে,  এখানে নানা ধরনের চীনা মাটির ৫০০টিরও বেশি মৃৎশিল্প রয়েছে। এখানকার বিভিন্ন রকম মাটির মধ্যে প্রাচীন স্থাপত্য চীনামাটি, স্বাস্থ্যসম্মত চীনামাটি, শিল্পায়ন চীনামাটি, হাইটেক চীনামাটি, শিল্পকলা চীনামাটি ইত্যাদি অন্যতম। আবার শিয়া মহাদেশের মৃৎশিল্পের ইতিহাসে দেখা যায়, খ্রিস্টীয় ১৩ শতকে সং রাজবংশের সময় চীনে তৈরি হতো"সেলাডন' নামক মাটির তৈরি বাসনপত্র ও শো-পিস। এগুলোকে বলা হতো '  চীনারাই সর্বপ্রথম সেলাডন প্রস্তুত করেছিল।  চীনারা এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় সেলাডন রপ্তানি শুরু করে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই সেলাডনগুলো মৌলিক সৌন্দর্যগুণে তুরস্কের শাসকসহ অন্যান্য শাসক এবং রাজাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।


ইতিহাস এর পাতা উল্টিয়ে দেখলে  সমস্ত উন্নত সংস্কৃতিতে মৃৎশিল্পের   শৈল্পিক প্রমাণ আছে। ২০০০ বছর আগে বিলুপ্ত আফ্রিকান নোক সংস্কৃতির মাটির তৈরি জিনিসপত্র আজকে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে  আছে।   কুমারের চাকা সম্ভবত মেসোপটেমিয়া এ ৪ র্থ সহস্রাব্দে মেসোপটেমিয়া আবিষ্কার করা হয়েছিল।বর্তমান যুগে যেসমস্ত সংস্কৃতি তাদের উৎকৃষ্ট মৃৎশিল্পের জন্য বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য সেগুলির মধ্যে আছে চীনা মৃৎশিল্প, ভারতীয় উপমহাদেশের মৃৎশিল্প, ভূমধ্যসাগরের ক্রিট দ্বীপীয় মৃৎশিল্প, গ্রিক মৃৎশিল্প, পারসিক মৃৎশিল্প, মায়া সভ্যতার মৃৎশিল্প, জাপানি ও কোরীয় মৃৎশিল্প, এবং আধুনিক পাশ্চাত্য সংস্কৃতিগুলিতে  মৃৎশিল্প উল্লেখযোগ্য ছিলো।




মৃৎশিল্পের মৌলিক উপাদানগুলি হল মৃন্ময় বস্তুর আকৃতি, এটির বাহিরের  রঙচিত্র অঙ্কন করে বা খোদাই করে শোভাবর্ধন, এবং এটির উপরের চকচকে প্রলেপ দেওয়া হয়েছে কোথাও কোথাও। ইতিহাসের পর্বভেদে ও সংস্কৃতিভেদে এই উপাদানগুলির উপরে ভিন্ন ভিন্ন মাত্রায় জোর দেওয়া হয়েছে, এটাই পার্থক্য। বাংলার মৃৎ শিল্প অনেক প্রাচীন, অনেক ই অনুমান মহেঞ্জোদারো সমসাময়িক আমাদের শিল্প। ধাতু আর প্লাসিক ব্যবহারে জন্য এ শিল্পের চাহিদা কমছে। কিন্তু এ শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে আমাদের ই পন্য চাহিদা তৈরি করতে হবে। যেমন ধরুন, মাটির ব্যাংক বা মাটির লক্ষী ভান্ডার।




নামটা শুনে ই ছেলেবেলা ফিরে গেলেন নিশ্চিত। মাটির রুই মাছ, পশু পাখি, ফল। একটা ছোট ছিদ্র থাকতো পয়সা ফেলার। পয়সা ফেলার পর প্রতি বার আমরা মাটির ব্যাংকটা ঝাকিয়ে শব্দ শুনতাম। মাটির ব্যাংকে কাঁচা পয়সার শব্দ মনের মধ্যে এক ধরনের শিহরণ জাগাতো। এরপর সেই মাটির ব্যাংকও কোনো এক বিপদের দিনে সেটা ভেঙে ফেলা হতো। এটার চাহিদা আছে এখনো।


2 comments: