আজকের বহড়ু গ্রাম মধ্যযুগের 'বড়ুক্ষেত্র'।রায়মঙ্গল কাব্যে উল্লেখ আছে 'বড়ুক্ষেত্র'-এর। ঊনবিংশ শতকের প্রথম ভাগে জনৈক নন্দকুমার বহড়ুর জমিদার বসু লাভ করেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লবণ বিভাগের দেওয়ান হিসাবে । ইনি কিছুসময়, জয়পুর রাজপুতানাদর দেওয়ান ছিলেন। উল্লেখ্য তিনিই বৃন্দাবনের তিন প্রধান দেবতা গোবিন্দ, গোপীনাথ ও মদনমোহনের জন্য তিনটি মন্দির নির্মাণ করেন জয়পুরের রাজার অনুমতিতে।১৮১৯ থেকে ১৮২১ সালের মধ্যে তিনি জয়পুরে তিনটি মন্দির নির্মাণ করেন।তিনি স্থির করেন যে তার বৃদ্ধা মায়ের জন্য বহড়ুতেই মথুরা-বৃন্দাবন স্থাপন করবেন। সেই মত তিনি জয়পুর রাজ্যের চুনার থেকে পাথর ও স্থপতি আনিয়ে বহড়ুতে শ্যামসুন্দরের মন্দির নির্মাণ করেন। ১৮২৫ সালে মন্দিরের গাত্রে দেওয়ালচিত্র অঙ্কন করেন বর্ধমান জেলার দাঁইহাটের শিল্পী গঙ্গারাম ভাস্কর। পরবর্তীকালে বসু পরিবার বহড়ুতে পাঁচটি শিব মন্দির নির্মাণ করেন এখানে। তবে এই অঞ্চলে একটি দোল মঞ্চ আছে।
কিন্তু দূর্ভাগ্য আমাদের এখানে একটি দূর্গা দালানো ছিলো।
বর্তমানে এটি ধংস স্তূপের পরিনত হয়েছে। আমি বাংলার পাঁচ ছয়টি পুরাতন দূর্গা দালাল দেখেছি এটি তার মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ছিলো। কিন্তু বাঙালী তার স্হাপত্য নিদর্শন এর বিষয়ে উদাসীন। তাই আজ অজ্ঞাত কারণে এটি ধংস স্তুপে পরিনত হয়েছে।
দুর্গা মন্ডপটা পাঁচখানি এআর্চ আর সম্ভবত: সাতখানি গুচ্ছস্তম্ভ ধরে রেখেছিলো দালানের ছাদের ভার। মূল মন্ডপের সামনের অলিন্দে একই সংখ্যক আৰ্চ আর স্তম্ভরাশি দিয়ে , ছিলো সুসজ্জিত। আর্চ গুলোতে পঙ্খের নকশা। আর দুটি আর্চর মাঝের খাড়া দু সারি শিকল আর পাকানো ফিতের নকশা ছিলো। করুনকার্নিশের উপর ছাদের ঠিক নিচে ফেস্টুনের সার সার অলঙ্করণ আর আর্চের ভিতর পঙ্খের কাজের অপরূপ ফ্যানলাইট কাজ ছিলো।
No comments:
Post a Comment