ময়দা বসুচৌধুরী জমিদারবাড়ি, বহড়ু, জয়নগর, দ: ২৪ পরগনা।এই চৌধুরী পরিবারের জনৈক দুলাল চৌধুরীর ঠাকুরদাদা , এঁদের অংশেই রয়েছে চৌধুরীদের শীতলাবাড়ি। প্রায় আড়াইশ' বছর আগে শ্রীক্ষেত্র থেকে নিয়ে এসেছিলেন নিমকাঠে তৈরী এই দারুমূর্তি।এই মূর্তী স্থাপনের পিছনের কোনো ইতিহাস আছে কি না, এ মূর্তী স্বপ্নে পাওয়া কি না, সে সম্বন্ধে অবশ্য কিছু জানাতে পারলেন না ঠাকুরের বর্তমান সেবায়েত চক্রবর্তীরা। তাঁদের কাছ থেকে যা জানা গেল, তিনি এই মূর্তী স্থাপনের পর, জগন্নাথের নিত্যপূজার জন্য গ্রামের চক্রবর্তীদের সেবায়েত নিযুক্ত করেন ও ঠাকুরের জন্য উৎসর্গীকৃত দেবোত্তর সম্পত্তিতে বসবাস ও ভোগদখলের অধিকার দান করেন। আজও তাঁরাই ঠাকুরের মন্দির, যা জগন্নাথ বাড়ি নামেই প্রচলিত, সেই মন্দির ও তৎসংলগ্ন জমিতেই বসবাস করেন ও পালাক্রমে জগন্নাথের পূজাপাঠ করে থাকেন।
প্রায় দু'ফুট উচ্চতার এই একক জগন্নাথ মূর্তীর বাম দিকের ফাঁকা স্থানটি বাণলিঙ্গ ও শালগ্রাম শিলার জন্য নির্দিষ্ট। এ ছবি যখন তোলা, সেটা বৈশাখ মাস হওয়ায় তাঁরা তখন সিংহাসন ছেড়ে তাম্রকুণ্ডে ঝারার নীচে অবস্থান করছিলেন। দীর্ঘদিনের এই মূর্তীর রঙ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সেবায়েত চক্রবর্তীরা নিজেরাই মূর্তীটিকে যথাসাধ্য রূপদানের চেষ্টা করেন, মনে হয় সে কারণেই মূর্তীটি সাবেক উড়িষ্যা ঘরাণা ছেড়ে একটু অন্যরকম রূপ পেয়েছে। প্রসঙ্গত: এ জগন্নাথের কোনো রথযাত্রা হয়না। ক'বছর আগে স্থানীয় কিছু মানুষ ও একটি ক্লাব রথযাত্রার উদ্যোগ নিলেও, প্রথা নেই বলেই বর্তমান মূর্তীর সেবায়েত ও রক্ষক চক্রবর্তীরা সে প্রচেষ্টায় সায় দেয়নি।

বিগ্রহটি আনুমানিক দু-আড়াই শো বছরের প্রাচীন। শোনা যায়, একবার রথযাত্রার সময় রথসহ জগন্নাথ সুভদ্রা বলরামের তিনটি বিগ্রহই পুকুরে পড়ে যায়। শুধুমাত্র জগন্নাথ বিগ্রহটি তুলে আনা সম্ভব হয়। আর বিশাল রথটি সময়মত জল থেকে তুলতে না পারায় নষ্ট হয়ে যায়। মতান্তরে, এমন এক বিপত্তি দৈব-ঘটিত ভেবে রথযাত্রা বন্ধ করে দেওয়া হয়) জগন্নাথ বিগ্রহটি বর্তমানে বসুচৌধুরীদের পুরোহিত চক্রবর্তীরা নিত্যসেবা করেন।
📷 চিত্রগ্রাহক: Sushyamal Ghosh
জয় জগন্নাথ
No comments:
Post a Comment