Friday, 8 December 2023

গণপুর গ্রাম রামেশ্বর শিব মন্দির

গণপুর গ্রাম রামেশ্বর শিব মন্দির কমপ্লেক্স কথা জানান কি আপনি?

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার সিউড়ি সদর মহকুমা মহম্মদ বাজার সি ডি ব্লকের একটি পুরানো গ্রাম গণপুর ।

গণপুর গ্রাম রামেশ্বর শিব মন্দির কমপ্লেক্স কথা অনেকটাই প্রচারে আড়ালে। বীরভূমের সিউড়ি রামপুরহাট রাস্তার ধারে গণপুর পৌঁছে যেতে পারেন আপনি। চারিদিকে শাল জঙ্গলে ঘেরা গণপুর। ডেভিড জে ম্যাককাশন তাঁর Temples of Bengal, (1972), বই লিখেছেন গণপুরে অনেকগুলি ছোট ছোট চার চালা মন্দির আছে ।যেগুলি ইঁটের তৈরি এবং তাদের সম্মুখভাগ সমৃদ্ধভাবে খোদাই করা ভাস্কর্যে। তিনি ১৭৬৯ সাল নাগাদ প্রতিষ্ঠিত একটি বিষ্ণু মন্দিরেরও উল্লেখ করেছেন ।এটি মণ্ডল পরিবারের দ্বারা নির্মিত একটি আট চালা মন্দির, এবং ইঁট দিয়ে নির্মিত।

কয়েকটি পাথর দ্বারা নির্মিত মন্দির ছাড়া বীরভূম জেলার অধিকাংশ মন্দিরই ইট দ্বারা নির্মিত। যে ঐতিহাসিক পটভূমিকায় এই সমস্ত মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় সেইসময় এইগুলির নির্মাণে আশানুরূপ অর্থ সাহায্য রাজকোষ থেকে পাওয়া যায়নি। সাধারণ জমির অধিকারী, পণ্ডিত, ব্যবসায়ীদের দ্বারা অধিকাংশ মন্দিরই প্রতিষ্ঠিত হয়।

আগে বীরভূম ছিলো নানা শিল্পে উন্নত। গণপুর, মল্লারপুর, মহম্মদবাজার, এইসব এলাকা লোহা নিষ্কাশনের জন্য বিখ্যাত ছিলো। সেই সুবাদে তখন থেকেই গণপুর একটি বর্ধিষ্ণু গ্রাম।

সেকালে দেশীয় প্রক্রিয়ায় আকরিক লোহা থেকে লোহা নিষ্কাশনের কেন্দ্র ছিল বীরভূম ।এই গ্রামের চৌধুরী বংশ লোহার কারবার করেই বিত্তশালী হয়েছিল। তাঁদের প্রাচুর্যের প্রমাণ গণপুর গ্রামে অবস্থিত ১৪ টি চারচালা মন্দির। একটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরা আয়তকার জমির মধ্যে তিন দিকে অবস্থিত ও সামান্য উঁচু ভিত্তিবেদির উপর স্থাপিত চারচালা ১৪ টি শিব মন্দিরের। মন্দিরগুলির ৭টি পশ্চিমমুখী ৪টি পূর্বমুখী এবং ৩টি দক্ষিণমুখী । ১৭৬৭ সাল নাগাদ বীরভূমে দারুণ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। লোহার ব্যবসা করে যথেষ্ট চৌধুরী পরিবার তখন বড়োলোক হয়ে ওঠেছিল। গ্রামের প্রজাদের খাদ্য বা অর্থের বিনিময়ে চৌধুরীরা এই মন্দিরগুলি নির্মাণ শুরু করেন। ১৭৭৯ সালে এই নির্মাণ শেষ হয়।

তবে গ্রামে। অন্যান্য পারিবারের বানানো কিছু মন্দিরও গ্রামে আছে। এখানে একটি একচালা শিব মন্দির আছে, যার দরজা শুধু শিবরাত্রির সময় খোলা হয়। গ্রামের একটা পুকুরে ডোবানো রাখা থাকে শিবলিঙ্গটি। শিবরাত্রির সময় দুদিনই শিবলিঙ্গ মন্দিরে আসে।

No comments:

Post a Comment