Friday, 17 February 2023

শিব রাত্রি ব্রত কি প্রমান করে?


শিব রাত ব্রত কাহিনী বিচার করলে , আমরা দেখতে পাই। এই শিব পৌরাণিক দেবতা হলেও , ব্রাহ্মণবাদকে সমর্থন সে করে না। অর্থাৎ ব্রাহ্মন বাতীত পূজা সে সন্তুষ্ট এবং সে আমার আদি খাদ্য সংগ্রহক সংস্কৃতিকে সম্মান করতে শেখাছে।

ব্রাহ্মন পূজা , যোগ্য করে তে ফল পান, তারচেয়ে বেশি ফল লাভ করছে সাধারণ মানুষ, খুব সাধারণ উপকরণ দিয়ে পূজা করে, যেখানে কোন মন্ত্র প্রয়োজন নেই, কিছুটা লৌকিক দেবদেবীদের মতোই সে যেনো অল্পতেই সন্তুষ্ট। এটা খুবই আকর্ষনীয় বিষয় কিন্তু কোথাও যেনো ব্রাত্যদের সংস্কৃতিকে গ্রহণ করছে, সাধারণ মানুষেরা।

বৈদিক যুগে আমরা যে 33 জন দেবতা পাই, তাঁরা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো প্রাকৃতিক শক্তির দেবতাই ছিলেন, (ইন্দ্র, বরূণ, পবন, অগ্নি)। কিন্তু সৃষ্টি ,পালন, এবং ধংসের দেবতা হিসেবে আবির্ভূত হলেন ব্রহ্মা , বিষ্ণু , মহেশ্বর।

বৈদিক যুগে অবসান ঘটিয়ে ত্রিদেবের আবির্ভাব আসলে আমার চোখ ঈশ্বরকে সার্বজনীন করা। কারণ বৈদিক যুগে হোমযোগ্য করা হতো যা বিলাস বহুল, অভিজাতদের ব্যাপার সেপার। সবচেয়ে বড় কথা সতীর কাহিনী দেখলেই বুঝতে পারবেন, শিব দরিদ্র হওয়ায়, তার শশউরআলয়ে যোগ্য আমন্ত্রণ পেলেন না। তাই সতী অপমানে দেহত্যাগ করেন। সুতরাং ত্রি দেবের আবির্ভাব সাধারণ মানুষকে ঈশ্বর সাধনার অধিকার দিলো।কৃষ্ণ, শিব , ব্রহ্মার আচরণ কিন্তু দেখা গেল মানুষের মতো।

শিব রাতের ব্রত কথা থেকে বুঝতে পারবেন, চরম উদাসীনতার প্রতীক সে, অল্পতেই তৃপ্তির পায় সে। আসলে এই উদাসীন কারণ সে ধংস কর্তা। তবে প্রশ্ন ধংসের দেবতা হিসেবে শিবের প্রয়োজন কেন? খুব সাধারণ আজ জনসংখ্যা বৃদ্ধি হলে রাষ্ট্র জন্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা গ্রহণের করে। অতি প্রাচীন কালেই আমাদের পূর্বপুরুষদের চিন্তা করেছিলেন অতিরিক্ত কিছু হলে তার ধংসের প্রয়োজন তাই, শিবের আবির্ভাব। বোধহয় একটি বিতর্কিত চরিত্রে বৈপরীত্য ভরপুর । আসলে এইসব ঘটেছে মানবায়নে ফলে। রুদ্র রূপকে ভক্ত পরিনত করেছে শান্ত শিবে।

ব্রাহ্মনরা শিবকে কিন্তু অদ্ভুত ভাবে পশুপতি, ভুতবান নামে ডাকছেন।বলতে চাইছেন ঈশ্বর গোষ্ঠির রাগ থেকে সৃষ্ট এই শিব তাদের উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পশুপতি হবার অধিকার চাইছেন। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে তিনি দেবতা হবার অধিকার অর্জন করলো অনেক পরে। প্রজাপতিকে শাস্তি দিতে তাঁর জন্ম।

তিনি আদি দেব কখনো ছিলেন না। মঙ্গলকাব্য যেমন আমরা দেখি জোর করে দেবতারা ভক্তদের পূজা পাচ্ছেন তেমন ব্রাহ্মনরা বর্ণনা করেছেন দেবতারা যখন মানুষের করা যোগ্যের ফল নিয়ে স্বর্গ সুখ উপভোগ করছেন, তখন তাঁর বাঁধা হয়ে শিব দেবতা হয়ে উঠেছেন প্রায় জোর করেই।

আসলে দক্ষ উপমা দেখুন শিবকে কন্যা দান তিনি শূদ্রকে বেদ পড়ানো সাথে তুলনা করছেন। সুতরাং শিবের দেবতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বোধহয় নিম্ন বর্ণের মানুষের কাছে একটি সুখবর।

আসলে কথায় ফিরে আসি ব্রতকথা দেখছি চন্ডালের বা ব্যাধের পূজায় তিনি তুষ্ট, সতীর কাহিনীতে দেখা যাচ্ছে দক্ষ শিবকে না নিমন্ত্রণ কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যা বলছেন তারা মানে কিন্তু দাঁড়ায় ব্রাহ্মন সমাজের বাইরে তিনি অসভ্য মানুষদের প্রতিনিধি তিনি। তাই শিব জনপ্রিয় দেবতা হয়ে ওঠা বোধহয় অসভ্য অনার্যদের সংস্কৃতির স্বীকৃতি।

শিব দেবতা হওয়া ব্রাহ্মনবাদ বা বৈদিক যুগের শেষ। কারণ বর্তমানে বলি প্রথা দেখা যায় ছাগল বলির প্রথা। আসলে এই ছাগল মুখ দক্ষের প্রতীক যিনি সেই ব্রাহ্মণদের প্রতিনিধি যারা শিবকে দেবতা হিসেবে মানতে চায় নি।

No comments:

Post a Comment