মল্লেশ্বর শিব নিত্য কথা সবাই জানেন। এই মন্দিরের পাশেই আছে সিদ্ধেশ্বরী কালী। মন্দিরটি এক বাংলা শৈলীর নিদর্শন। মন্দিরের গর্ভগৃহটি একটি আটকোনা মন্দির আছে। গর্ভগৃহে সিদ্ধেশ্বরী কালী মূর্তি নিত্য পূজা পান। স্থানীয় লোকেদের বিশ্বাস, ইনি তারাপীঠের তারা মা'র বোন। তাই একে মেজো মা বলা হয়।
মল্লেশ্বর শিব বা সিদ্ধিনাথ শিব মন্দির, বীরভূম জেলার মল্লারপুরে একটি প্রাচীন মন্দির।কথিত আছে মহাভারতের অজ্ঞাতবাসকালে শ্রীকুন্তিদেবী এই মহাদেবের পূজা করেছিলেন । মহালিঙ্গেশ্বর তন্ত্রে স্বয়ম্ভূ শিব মন্দিরের তালিকা আছে তাতে এই মহাদেবের কথা আছে। সিদ্ধিনাথ 'ওঁ' আকৃতির কথা বলা আছে।
বীরভূমের সিদ্ধিনাথ রাঢ়ে বাংলার তারকেশ্বর
লোক কথা অনুযায়ী মহারাজ মল্লনাথ সিংহ এই জনপদের উন্নয়ন করে রাজধানী প্রতিষ্ঠার এবং শিব মন্দিরের সংস্কার করেন।তাই জনপদের নাম মল্লারপুর এবং এই শিবের নাম 'মল্লেশ্বর' হয়ে গেছে।
মহারাজ মল্লনাথ সিংহের জন্মকথা নিয়ে জনশ্রুতি আছে যে,পাশে গ্রাম ফতেপুরে জনজাতির বাস ছিল অনেক আগেই।সেই সময় এই অঞ্চল গভীর জঙ্গল ছিল। এক মেষপালকের পদ্মিনী লক্ষণাযুক্তা মেয়ে সঙ্গে এক সন্যাসীর মিলন ঘটে। ফতেপুরে গ্রামের সেই মেয়ের গর্ভজাত সন্তান 'মল্লনাথ' ।মল্লনাথই মল্লারপুর রাজ্যের প্রবর্তন করে মল্লরাজ নামে পরিচিত হয়েছিলন । তিনি রাজ উপাধি গ্রহণ করেন। তাঁর রাজত্বকালে এই মন্দিরে পূজিত শিবলিঙ্গ এটি'।
১১২৪ শকাব্দে মল্লনাথ নবরূপে মন্দির প্রতিষ্ঠা করে মল্লেশ্বর শিবের পুজো শুরু করেন। মন্দিরের গায়ে তা খোদিত আছে। মন্দির জন্য ৭৭২ বিঘে জমি দান করেছিলেন।
পরে এখানে মন্দির চত্বরেই বিভিন্ন সময় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন রীতির আরও ২৩টি মন্দির। তার মধ্যে জনপ্রিয় মন্দির সিদ্ধেশ্বরী মা বা মেজো মা মন্দির। তবে বাকি শিব মন্দির।মল্লেশ্বরের পিছনে রয়েছে বিখ্যাত তন্ত্রসাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশের জীবন্ত ইচ্ছা সমাধি।

No comments:
Post a Comment