Wednesday, 23 March 2022

জয় নগরের দোল উৎসব


“ডাহিনে অনেক গ্রাম রাখে সাধু চালা ।
ছত্রভোগ উত্তরিলা অবসান বেলা ॥
মহেশ পূজিয়| সাধু চলিল| সত্বর।
অম্বুলিঙ্গে গিয়া উত্তরিল সদাগর ॥”

বৈষ্ণব পদাবলী এই চার টি লাইন যথেষ্ট প্রমাণ দেয়, এককালে সুন্দর বন শুরু বাদ বন ছিলো না এখানে বানিজ্য সমৃদ্ধ জনপদ ছিলো। কিন্তু সুলতানদের শাসন কালে কলিকাতা যখন ইংরেজরা বন্দর তৈরি করলে, তখনই ডাচদের  বানিজ্য স্বার্থ  খালকেঁটে   আর সরস্বতীর সাথে যুক্ত করে দেওয়া গঙ্গার ধারাকে। গঙ্গার ধারাকে কেটে কিছুটা পশ্চিমে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাই একে  কাঁটিগঙ্গা বলা হয়। প্রসঙ্গত বলি  এই অংশের থেকে গঙ্গার জল কোনো পবিত্র তীর্থক্ষেত্রে লাগে না এই জন্য।  কিন্তু এই কাটি গঙ্গা আদি গঙ্গার মজে যাওয়ার প্রধান করান। এবং এর সাথে গঙ্গা র অন্যান্য নদী গুলি বিপদে পরায়। নদী নির্ভর শীল, বাংলার কৃষি  বানিজ্য শিল্প প্রভুত ক্ষতি হয়।
বৰ্ত্তমান হেষ্টিংসের দক্ষিণে ও খিদিরপুরের উত্তরে আদিগঙ্গা খুব প্ৰশস্ত ছিল এবং তথা হইতে শাকরাইল পৰ্য্যন্ত কোন নদী ছিল না । শাকরাইলের দক্ষিণে সরস্বতী  বইতো । সে আরো দক্ষিণ গিয়ে  দামোদর, রূপনারায়ণ ও হলদির নদীর সাথে মিশে সমুদ্রে মিশতো । খিদিরপুর থেকে শাকরাইল পৰ্য্যন্ত হুগলীন দা কাটিগঙ্গা নামে খ্যাত কাটিগঙ্গা  আসলে ভাগীরথ খাদ নহে ; হুগলী নদী ষোড়শ শতাব্দীতে খাত হয় এবং ভাগীরথী ও সরস্বতী খাল দ্বারা যুক্ত করা হয় ক্রমশঃ মূল ভাগীরথী  , আদিগঙ্গা মজিয়া গিয়ে জলপ্রবাহ ঐ খালে প্রবলবেগে প্রবাহিত হওয়ায় বৰ্ত্তমান কাটিগঙ্গার সৃষ্টি করিয়াছে।  এখন “পদ্মা” গঙ্গানদীর একাংশ বলে দাবি করা হলেও  কিন্তু পদ্মার বিস্তৃতি ও জলরাশির গৌরব আধুনিক। গবৰ্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেষ্টিংসের সময়ে ( খৃঃ১ ৭৮০ ) মেজর রেনেল সাহেব যে বঙ্গদেশের নদীসমূহের নক্সা প্ৰস্তুত করেন, তাহাতেও পদ্মার এখনকার রূপ দেখা যায় নি। তৎপূর্বে নবাবদিগের আমলেই ভাগীরথী ও পদ্মার সন্ধিস্থান, ছাপাঘাটীর মোহানী, বালুকারাশিতে বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল এবং গঙ্গার জল অধিকাংশই পদ্মার পথদ্বার বঙ্গীয় উপসাগরে পরছিল। ফারকা বাঁধ বানানোর পূর্বে যে খরস্রোতা পদ্মা আমাদের গঙ্গা নয়।
আদি গঙ্গা গতি পথ নিয়ে মাথা ঘামানোর কারণ  আদি গঙ্গা ঘিরে আমাদের বাঙালি জাতির অনেক ঐতিহ্য লুকিয়ে আছে।  কারণ যদি আদি গঙ্গা তার পূর্ব রূপটি ধরে রাখতে পারতো তাহলে, ছত্রভোগ, জয়নগর, বারুইপুর, বোড়াল , রাজপুর মতো জনপদ গুলো হয়তো আরো সমৃদ্ধ জনপদ হতো।

ধর্ম সাধারণত শাষকের অস্ত্র,  শেষ কয়েকটি শতক তাই ইসলাম শুধু নয় ব্রাম্ভন সমাজও  রাজ ধর্ম হবার সুবাদে , বাংলার   লোক সংস্কৃতি  সহ বৌদ্ধ ধর্ম, এবং জৈন ধর্ম কে নিশ্চিহ্ন , করতে এক ভালোই ভুমিকা গ্রহণ করেছিলেন। যেমন ব্রাম্ভন দের প্রভাবেই জটার দেউল পরিনত হয়েছে শিব মন্দিরে।এই সময় বৈষ্ণব ধর্ম টিকে রক্ষা এবং সংগঠিত করার দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে, এই আদি গঙ্গার ধারে ধরেই চৈতন্য মহাপ্রভু চলেছিলেন নীলাচলে। তিনি শাক্তদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। যেমন ছত্রভোগে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির এক সময় বলি বন্ধ হয়ে যায় তার প্রভাবে। 
এবার বৈষ্ণব এবং তন্ত্র বিদ্যার মুল লাড়াইটা হয়ে  ছিলো  জয় নগর অঞ্চলে। তাই এই অঞ্চলের মন্দির গুলো নিয়ে অনেক মিথ বা লোক কথা শোনা যায়। জয় চন্ডী, ধনন্তরীর, ব্রম্ভময়ী কালি কে নিয়ে শুধু নয় , সমান তালে রাধা কৃষ্ণের মন্দির নিয়ে ও চালু আছে অনেক মিথ গল্প । আবার ঠিক বেশ উৎসবের মতোই জয়নগর  বিভিন্ন স্থানে শ্রী কৃষ্ণের বিভিন্ন রূপের পূজা হয় । দোলের পরের  দ্বিতীয় দিনের পুজো দ্বিতীয় দোল ,তৃতীয় দিনের পুজো তৃতীয় দোল এভাবে সাত দিন ধরে সাত জায়গার আলাদা আলাদা মন্দিরে চতুর্থ ,পঞ্চম ,ষষ্ঠ ,ও সপ্তম দোল নামে দোল উৎসব উৎযাপন করা হয় ।  এই প্রত্যেকটা পুজোরই কোনো না কোনো মিথ তবে সবচেয়ে প্রচার পেয়েছে নটঘট ঘটনা ঘটে পঞ্চম দোল কথা । রাধাবল্লভতলার রাধাবল্লভ জিউ দোল উৎসবে । 


মিথ টি একটি  সেটা হলো কদম গাছ  নিয়ে । বহু যুগ পুরোনো কদম গাছে পুজোর দিন ভোরে এই  কদম ফুল ফুটবেই ।  এই ফুল দিয়েই পূজিত হবেন শ্রী রাধাবল্লভ জিউ । যা এই সময় বিরল । এই অর্পণ করে হয় শ্রী রাধাবল্লভ জিউ এর চরণে । এছাড়া আরো একটি ঘটনা হলো নটঘট শ্রী কৃষ্ণ কথা। বৈষ্ণব মতে দোল পূর্ণিমার দিন  রাধা কৃষ্ণ যখন দেখা হয়েছিল  তখন  রাধা পোশাকের কারণে অপ্রস্তুতে পরে, তখন আবীর রঙ দিয়ে রাধার লজ্জা ঢাকে সখী রা । সেই থেকেই দোল উৎসব এর রিতীনুসারে রাধাকৃষ্ণ কে আবীর মাখানো হয়। তা এখানকার কৃষ্ণ এতই নটঘট যে পুজোর পর সকল ভক্তবৃন্দের ও দর্শনের পর আবার  যখন তাঁকে স্নান করিয়ে মন্দিরে স্থাপন করা হয়। তখন  যদি  তাঁর বিগ্রহে একবিন্দু  আবীর বা   জলের কনা   থাকে তাহলে তিনি কোনো সেবায়েতদের  ঘুমোতে দেন না ।
ছবি সৌজন্য : বাপ্পাদিত্য পাইক


Saturday, 19 March 2022

মজিলপুরের দোল উৎসব

মুর্শিদকুলি খাঁ যখন বেতরের কাছে খাল কেটে গঙ্গার মূল ধারা ঘুরিয়ে সরস্বতী নদীর মরা খাত দিয়ে বজবজ, রায়চক, ফলতা, ডায়মণ্ডহারবারের পাশ দিয়ে সাগরের মুড়িগঙ্গায় নিয়ে গিয়ে মিশিয়ে ছিলেন তখনই থেকে কালিঘাট , বারুইপুর, জয়নগর হয়ে ছত্রভোগ বন্দর অবধি যে আদিগঙ্গা বয়ে যেতো, তার মৃত্যু হয়ে যায়।১৭৭৫ খ্রীঃ কর্নেল টালি আদিগঙ্গার সঙ্গে বিদ্যাধরী নদীর যোগ স্থাপন করে শেষ রক্ষা করতে পারলেন না আদি গঙ্গার।



আর আদিগঙ্গার মজা গর্ভে সতেরো শতকে থেকেই  জনবসতি গড়ে উঠেছিল বলে , দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর পার্শ্ববর্তী  অঞ্চলের নাম মজিলপুর। মজিলপুরের নাম বলেই পুতুল মেলা আলো করে বিরাজ করা আহ্লাদী পুতুল, বাবু পুতুল, বেনেবউ পুতুল আর নানাধরণের পশুপাখির পুতুলের কথা মনেপরে। বাবু পুতুল তো নিছক পুতুল নয়,  বাংলার বাবুদের কৃত্রিমতা ও ঔদ্ধত্যের প্রতি মজিলপুরের পুতুল   ব্যঙ্গ করে শিল্পীরা তৈরি করে ছিলো এই পুতুল।
মজিলপুরে পুতুলশিল্প গড়ে ওঠার একটা ইতিহাস  ঘাটলে দেখা যাবে এখানকার জমিদার দত্ত পরিবার এসেছিলেন ওপার বাংলার যশোর থেকে এই শিল্পীদের।
এক সময় সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়  বারুইপুরের সাবজুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে আসেন । এ সময় তিনি দত্ত পরিবারে বেশ কিছুদিন ছিলেন । কিছু সমালোচক বলেন, তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস ‘বিষবৃক্ষ’ রচনার পটভূমিকা  দত্ত পরিবারের জমিদারি ।এই দত্ত জমিদারদের আটচালার শিব মন্দির, গোপাল মন্দির , একটি দোল মঞ্চ আছে।



যতদূর জানি এরা দূর্গা পূজা উদযাপন করেন।জমিদার দ্বারিকানাথ দত্তের হাত ধরে শুরু হয়েছিল   মজিলপুরে দুর্গাপুজো। দ্বারিকানাথের পুত্রবধূ বাপের বাড়ির পুজোয় থাকাকালীন শ্বশুরবাড়িতেই পুজো করার স্বপ্নাদেশ পান।
তবে এদের দোল উৎসব টিও বেশ জনপ্রিয়।



মজিলপুর দত্ত পরিবারের প্রায় দুশত বাঃ তার বেশি বছরের দোল মঞ্চ।জয়নগর মজিলপুরের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য দোল উৎসবের প্রথমটি হয় এখানে প্রতিপদে র দিন।তার আগের দিন হয় চাঁচড়।



দোল উৎসব মান, বসন্ত এসে গেছে , উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথেই, ফুল ফলের মুকুল ধরতে থাকে প্রকৃতির উর্বরা শক্তি বাড়তে থাকে ক্রমে ।  কখনোও কখনো  হওয়া খরা পরিস্থিতি  ও আসে।যখন মানুষ সভ্য হয়নি  তখন এসব দেখে সে ভাবতো প্রকৃতি  মানুষের ওপর ক্রুদ্ধ হয়েছে তাই এমন হয়েছে। তাই তারা বলি দিয়ে প্রকৃতি মায়ের কাছে রক্ত নিবেদন করতো , পুড়িয়ে তার ছাই রক্ত ছড়িয়ে দিত ক্ষেতে।সেই পোড়ানোর অনুষ্ঠান চাঁচড়।যাকে পোড়ানো হত তাকে বলা হত মরা ক্রমে সেই কথাটি তাৎপর্য হারিয়ে হল ন্যাড়া কোনো ক্ষেত্রে । আর পরের দিনে ক্ষেতে ম্যারার রক্ত মাখা ছাই ছড়ানোর অনুষ্ঠান ক্রমে সভ্য সমাজে হল লাল আবীর ।ম্যারাকে দোল দিয়ে পোড়ানো হত তলায় আগুন দিয়ে তাকে বলা হত হিন্দোল। ফাল্গুনের পর চৈত্রে গাজনে এই অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অবশেষ এখন ও দেখা যায় ।কারন বিশ্বাস ছিল আগুনে ম্যারা যত ঘামবে কাঁদবে তত বৃষ্টি ভালো হবে ফসল ভালো হবে।এসবই তারা করতো সেই সময়ের ধারনা অনুযায়ী সমাজের ভালোর জন্য।দোল তাই শুভ।ক্রমে ম্যারার বদলে রাধা কৃষ্ণের মূর্তি প্রতিস্থাপিত হয়েছে দোলে।ভারতে নান প্রান্তে নানা গল্প তৈরি হয়েছে এসবকে ঘিরে হোলিকা কে পোড়ানো বুড়ির ঘর পোড়ানো ইত্যাদি।সৃষ্টি হয়েছে কিছু ছড়া আজ আমাদের ন্যাড়া (ম্যাড়া)পোড়া কাল আমাদের দোল পূর্ণিমাতে ----বল হরি বোল।

Friday, 18 March 2022

মহেশপুর দোল উৎসব

শোলা শিল্পের জন্য ব দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার মহেশপুরের দেশ জোড়া খ্যাতি তার শোলা শিল্পের জন্য।     মহেশপুর গ্রামের বিখ্যাত দোল উৎসব-মেলার জন্য ও। মহেশপুরের  দোল মঞ্চটি মাটির।তিন হালদার পরিবারের তিন মন্দিরের বিগ্রহ নিয়ে দোল উৎসব এবং মেলা।


  তবে এর আয়োতন তা যে কোনও মানুষের মনে বিষ্ময় জাগিয়ে তোলে । মঞ্চে র সামনেই এক বিশাল দিঘি আছে।  দিঘিটা কাটার পর, তার পাহাড় প্রমাণ মাটির সদব্যবহার করার প্রয়োজনেই এই মঞ্চের পরিকল্পনা মনে এসে ছিলো বলে মনে হতে পারে ই। 




দোলযাত্রার দিন তিনেক আগের দোলমঞ্চ।। স্থানীয় মানুষজনের অক্লান্ত পরিশ্রমে গড়ে ওঠেঝক্ ঝকে চেহারা দোলমঞ্চ ওঠে । নব কলেবর তার মনোমুগ্ধকর গড়ন! অনেক টা পিরামিডের মতো।



দোল উৎসব সাথে  দেখা র মতো নিদর্শন বড়ো তরফের গোবিন্দচন্দ্রজীর মন্দিরের কাঠেরথাম। যা একসময় ভেঙে পড়া মূল মন্দিরের চালার ভার রক্ষা করতো। এমন আপাদমস্তক অলঙ্কৃত এগারোখানি থাম রয়েছে এ মন্দিরে। 

এছাড়া আছেন মেজো হালদারদের মন্দিরের কষ্টিপাথরের  কৃষ্ণ ঠাকুর ও পিতলের রাধিকা সামনে কষ্টিপাথরের গোপাল ও প্রায় আট ইঞ্চি শালগ্রাম শিলা।

Tuesday, 15 March 2022

শোভা বাজার রাজবাড়ি র দোল উৎসব

রাজা নবকৃষ্ণ দেব শোভাবাজার রাজ বাড়ি র ঠাকুরদালানে শ্রীশ্রী গোবিন্দ জিউর বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেন ১৭৬৬ খ্রিস্টাব্দে। তখন থেকেই শোভাবাজার রাজবাড়িতে  মহা সাড়ম্বরে দোল উৎসব পালিত । দোলের আগের দিন হয় নেড়া পোড়া বা চাঁচর  বা  বহ্ন্যুৎসব করা হয়। এটাকে আমরা বুড়ি ঘর বললেও এটি শ্রীবিষ্ণুর অসুর দমনের  বিজয়োৎসবের প্রতীক।  বহ্ন্যুৎসব  আসলে হোলিকা দহন, এটাকে আমরা বুড়ি ঘর বললেও এটি শ্রীবিষ্ণুর অসুর দমনের  বিজয়োৎসবের প্রতীক। প্রহ্লাদকে বাঁচাতে বিষ্ণুর দ্বারা হোলিকা বধকে উদ্‌যাপন করা হয় এই উৎসব এর মাধ্যমে। 

 

বৈষ্ণব মতে, ফাল্গ‌ুনী পূর্ণিমা বা দোলপূর্ণিমার দিন বৃন্দাবনেরং খেলায় মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ আবির বা গুলাল নিয়ে রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের সঙ্গে ।শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দজির পুজো, আরতি ও হোমে হয় সন্ধ্যায় , তার পর হোমের জ্বলন্ত কাঠ দিয়ে মন্ত্রোচ্চারণের সঙ্গে  বুড়ির ঘরে আগুন ধরানো হয়।

 দেবদোল বা নারায়ণের দোলদোলের দিন সকালে হয়।  পুজোর পর নারায়ণকে  আবির দেওয়া হয়,  অভিষেক করা হয়। অভিষেক মানে পবিত্র  জল,  দূর্বা , মধু , দুধ দিয়ে স্নান করানোকে বোঝানো হয়। দোলনায় দোলানো রাধাগোবিন্দজিকে এরপর হয় ।   রাধা গোবিন্দজিকে ভোগনিবেদন করা হয় ।  রাধাগোবিন্দকে আবির দেওয়া হয় ভোগের পর।  রাধাগোবিন্দর অভিষেক করা হয় আবার দোলখেলার শেষে।  সেবায়েতদের ও ভক্তদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয় বিগ্রহের গায়ের আবির। 
এই দোল উৎসব ঘিরে বসন্ত উৎসব এর আয়োজন করা হয় রাজ বাড়ি তে , এবছর ১২/০৩ /২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে এই উৎসব।
Manab Mondal

Monday, 14 March 2022

সাউথ গরিয়া দোল উৎসব

দোল উৎসব নিয়ে কথা বলে গিয়ে, আজ বলতে হবে দূর্গা পূজা র কথা। আজ যে জমিদার বাড়ি দোল উৎসব কথা বলবো সে পরিবারের দূর্গা পূজাতে ই লর্ড ওয়ারেন হেস্টিং সস্ত্রীক এই আসতেন প্রতিবছর পুজো দেখতে । হূ ঠিক ধরেছেন সাউথ গড়িয়ায় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দূর্গা পূজার কথা বলছি আমি ‌। ১৬৬৫ সালে এখানেই শুরু হয় দেবী দুর্গার আবাহন। মুঘদের প্রধান খাজাঞ্চি রাজকিশোর বন্দ্যোপাধ্যায় এই জমিদারির সূচনা করেছিলেন । ষোড়শ খ্রিস্টাব্দে দক্ষিণ বারাসত থেকে সাউথ গড়িয়ার আসেন এই বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এবং সাতটি পরিবার তথা সাতটি ঘর নিয়ে এই জনপদের সূচনা হয়েছিল । সাত ঘর থেকেই সাউথ গরিয়া নাম এসেছে ইংরেজদের ভুল উচ্চারণ ফলে।  
লোক মুখে শোনা যায়, এখনকার শ্রীশ্রী জনার্দন জীউ ঠাকুরকে কে উদ্ধার করা হয় , বিদ্যাধরী নদীর মজে যাওয়া অংশ একটি পুকুর থেকে থেকে। মূর্তি বহু মূল্যবান কষ্টি পাথরের হওয়ায় শুধু মাত্র দোল উৎসব এর দিন এটি দেখার সুযোগ মেলে। 
দোল উৎসব বিভিন্ন জমিদার বাড়িতে ই হয়। কিন্তু বন্দোপাধ্যায় জমিদারদের কথা একটু আলাদা , কারণ এই পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন , দূর্গাদাস বন্দোপাধ্যায় মতো সংস্কৃতি প্রিয় মানুষ রা। আপনাদের জানিয়ে রাখি #বাংলারথিয়েটার জগতে দূর্গাদাস বন্দোপাধ্যায় এক বিশেষ অবদান ছিলো। তিনি নিজেও ভালো অভিনেতা ছিলেন। দোল উৎসব কেন্দ্র করে তাই চলে নানা সংস্কৃতি উৎসব। উল্লেখ্য যোগ্য বাংলা হারিয়ে যেতে বসা #ডংপুতুলনাচ আপনারা এখানে দেখতে পাবেন এখনো এই দোল উৎসবে।
ইংরাজী ১৬৬৫ সাল জমিদার শ্রীযুক্তবাবু গৌরীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় ও জমিদার শ্রীযুক্তবাবু যদুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের প্রতিষ্ঠিত ও তাঁহার পুত্র জমিদার শ্রীযুক্তবাবু পুলিন বিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয় পরিচালিত ও তাঁহার প্রপৌত্রদ্বয়’ শ্রীযুক্তবাবু কনক কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাশয় পরিচালিত ‘শ্রীযুক্তবাবু শ্যামল কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীযুক্তবাবু রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় শ্রীশ্রী জনার্দন জীউ ঠাকুর ও অন্যান্য দেবদেবীর সেবাকল্পে সাউথ গরিয়া যদুনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জয়েন্ট এস্টেট ও দেবত্তর ট্রাস্ট ও তাঁহার বংশধরগণ – শ্রী ডাঃ স্বর্ণবিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রীমতী পাপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রী পরমজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এই উৎসব টি এখনো সগর্বে পরিচালিত করেন প্রতিবছর।
সাউথ গরিয়া দোল বাড়ির এই দোল উৎসব যেতে হলে আপনাকে চম্পাহাটি রেলস্টেশনে নামতে হবে।

Sunday, 13 March 2022

জয়নগর বিবি মায়ের থান

"বদি" বলতে বুঝি ভক্ত ব্রতীদের গলায় খড়ের মালা  পড়া প্রথা। আবার অনেকে দাঁতের ফাঁকে একটি খড়ের টুকরো রাখতেন যাকে কুটি বলা হত ।প্রাচীন প্রথা ক্রমে অবলুপ্ত হচ্ছে।এখন কম দেখা যায়, বর্তমান প্রজন্মের  বৌ - মেয়েরা এই পুরোন প্রথাই জানেন না হয়তো।


  প্রসঙ্গত বলা যায়। কোনভাবে গরু জলে ডুবে , কিংবা গলায় ফাঁস লেগে,  বা অন্য কোন দুর্ঘটনায়, মারা যায়।  তাহলে গরুর মালিক গলায় খড়ের ফাঁস পরে, দাঁতে খড় কামড়ে বাড়ি বাড়ি মাগন ভিক্ষা করে গরুর শ্রাদ্ধ করত। মাগন বা  ভিক্ষা নিতে ঐ বেশে উঠোনে দাঁড়িয়ে গরুর মতো হাম্বা রবে ভিক্ষা চাইতো লোক জন আগে বাংলার পাড়া গাঁয়ে দিকে।  
 

  নিদৃষ্ট দিনে  মান শনিবার এবং মঙ্গলবার পৌঁছে গেলে‌। দেখতে পাবেন ,জয় নগর মজিলপুরের ,বিবি মা থানে  ভীড় উপছে পড়ছে । বিভিন্ন বয়সের মহিলাদের ভীড় এখানে চোখে পরে।৫০ বছর ধরে পূজা দিতে আসছেন এই প্রবীনারাও।


বামে বিবি মা ও ডানে রক্তা খঁ গাজীর মাটির স্তূপ প্রতীক।রক্তা খাঁ পাড়া,জয়নগর।আনুমানিক ২৫০ বছরের বেশী প্রাচীন এই থান।এই বিবি মার থানের হাজোৎ কারিনী আম্মাজান বেওয়ার বিবাহিত মেয়েরা

আমি লোকসংস্কৃতি ঠিক বুঝতে পারি না। কারণ সঠিক তথ্য পাওয়া জন্য কোন গ্রন্থে র সহযোগিতা পাওয়া যায় না। লোক দ্বারা পরিচালিত সব রিতী, তাই মুসলিম মহিলা কেও এখানে পূজা দিতে দেখা যায়। তবে সাত বিবি বোধহয় নদী মাতৃক এই দেশে সাত নদীর পূজা। পরে বিভিন্ন রোগ ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে এর আরাধনা শুরু করা হয় স্থানীয় মানুষের দ্বারা।



তবে সামাজিক ভাবে এই লোক সংস্কৃতি উৎসব এর গুরুত্ব অনেক খানি। এ শুধু হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের সম্প্রতি প্রমান নয়। সামাজিক ভাবে নারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কথা বলে দেয় এই পূজাতে।

পূজা শেষ করে খালি স্থানে বন ভোজন প্রথা আছে এখানে  । আদিতে বনেই ভোজন করা হত মনে হয় তাই বনভোজন কথাটি রয়ে গেছে আজ বোধহয় আমাদের মুখে।আমাদের ভাবায় এই প্রথা  তবে কি এটি প্রাক নব্যপ্রস্তর যুগের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে ,যখন মানুষ বনে বাস করতো, তখন তো শিকার ও সংগ্রহের জীবন যাপন করতো। আমি মনে করি, আজ যে বিভিন্ন  চন্ডি পূজা দেখি, সেখানে ও পাথর খন্ডকেই পূজা দেওয়া হয়। শিকার আগে পাথরে রক্ত উৎসর্গ করা হতো , সেটাই আজ সিঁদুর দানের প্রথা। বা পাথর গুলো লালা কড়ার কারণ।


তবে বিবি এই পূজার অন্য কিছু প্রথা  থেকে সেই ধারনার সমর্থন পাওয়া যায় আদিম জীবনের প্রমান পাওয়া যায়।  এখন যদিও বাগান বা মাঠে করা হয় বনের অভাবে।তাই বেশি ভাগ মানুষ ব্যাগে থলিতে মুড়ি বা অন্য খাবার নিয়ে আসেন।বিবি মা হাজোৎকারিনীক  বিবি মার স্তূপের গর্তে ঢেলে দেন ভক্তদের   আনা  দুধ বা জল। লোক বিশ্বাস এই আশির্বাদী   দুধ জল খেলে পূণ্য বা সুস্থ থাকবেন তারা। ।


Friday, 11 March 2022

বাওয়ালি নিয়ে কিছু কথা

লোকবিশ্বাস অনুসারে বাউলেরা নাকি বাঘ-বাঁধা মন্ত্র জানে। #বাওয়ালি কথা অর্থ সুন্দরবনের কাঠকাটা মানুষ । এরা কাঠ কাটার সময় হিংস্র জন্তুর আক্রমণ ও অন্যান্য দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা বাউলদের সাহায্য নেয় বলে এদের নাম হয়েছে বাওয়ালি। তবে এ বাওয়ালি, কথাটা এসেছে 'বনে এলি গেলি’— থেকে । তবে এখানকার অধিবাসীরাও বাওল সম্প্রদায়। বন-জঙ্গলের ওপরই ছিল তাঁদের জীবন নির্ভরশীল।
দীর্ঘ অবহেলায় মন্ডল জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত মন্দিরের হাল খুব খারাপ ছিলো একসময়। গোবিন্দজী এবং লক্ষ্মী-জনার্দনের মন্দির, দ্বাদশ শিবমন্দির,স্থাপত্য আর ঐতিহ্যের বাহক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাওয়ালি। ধন্যবাদ স্থানীয় মানুষের উদ্যোগ কে।
বাওয়ালির মণ্ডলরা কিন্তু আসলে রায় ।মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনকালে শোভা রাম রাই বা রায় বাংলার দস্যুদের বিদ্রোহ দমন করেন। তখন তখন হিজলি রাজসরকারের সেনাপতি ছিলেন শােভারাম রায়। রাজবাহাদুরের কাছ থেকেবজবজ অঞ্চলে পঞ্চাশটি গ্রামের সনদ এবং মণ্ডল তিনি উপাধিটি পান । শােভারাম অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দশকে বাওয়ালিকে তার জমিদারির মূল কর্মকেন্দ্র হিসেবে ঠিক করেন। তবে অনেক বলেন, বাসুদেব মণ্ডল এই জনপদের আসল প্রতিষ্ঠাএর বংশধর ‘শোভারাম মণ্ডল’-এর পৌত্র রাজারাম মণ্ডল-এর আমলে মণ্ডল পরিবার বাওয়ালিতে বসবাস শুরু করলেও , বাসুদেব রায় ও বংশধর ‘হরনন্দ মণ্ডল’ বাওয়ালি উপজাতির লোকেদের সাহায্য নিয়ে বাওয়ালি এলাকায় জমিদারি পত্তন করেন।
মণ্ডলদের ব্যবসা ফুলেফেঁপে ওঠে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে । ধীরে ধীরে বাওয়ালিতে গড়ে ওঠে একাধিক মন্দির, রাসমঞ্চ, দোলমঞ্চ , আর ইউরােপীয় রীতিতে তৈরি এক বিশাল রাজবাড়ি। সাথে এরা গড়ে তোলা টালিগঞ্জ অঞ্চলে ও তিনটি মন্দির ।
সম্ভবত ১৭৭২ সালে গড়ে ওঠে বাওয়ালির শ্রী শ্রী #রাধাকান্তজিউরমন্দির। ১৭৯৯ সালেশ্রী শ্রী গোপীনাথ মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয় । নবরত্ন মন্দির, দ্বাদশ শিবমন্দির – প্রত্যেকটি মন্দিরেই প্রাচীন প্রায় ২৫০ বছরের। একে গুপ্ত বৃন্দাবন বলা হয়। স্থানীয় মানুষের উদ্যোগে এখানকার #বসন্তউৎসব বা #দোলউৎসব খুব সুন্দর এবং আকর্ষণীয়।

Thursday, 10 March 2022

মন্দাকিনী পুতুল

আজ জানাবো মন্দাকিনী পুতুল এর কথা।সাত গ্রাম নিয়ে জনপদ গড়ে তুলেছিলেন বন্দোপাধ্যায় জমিদাররা এখানে, জমিদার পেয়েছিলেন, জাহাঙ্গীর কাছ থেকে। ইংরেজরা উচ্চারনে ভুল করে হয়েগেলো #সাউথগরিয়া । পথ নির্দেশনা চাইবেন জানি এখনই। এই জমিদারদের  বিনোদন  জন্য এখানে আনা হয় চম্পাবতী কে। সেই থেকেই চপ্পাহাটী , চম্পাহাটি নাম নিশ্চিত চেনা। এই বন্দোপাধ্যায় জমিদাররা ঠাকুর বানানোর জন্য কৃষ্ণনগরের থেকে মৃৎশিল্প দের নিয়ে এসে গড়ে তোলেন পাল পাড়া।  তারাই তৈরী করে আসছে এই পুতুল কে।



ছাঁচ তৈরি পুতুল। আলাদা করে রং করা হয় না এই পুতুল কে। উত্তর প্রদেশের গ্রামীণ পুতুল গুলো ঠিক এই ভাবে ই তৈরি হয়। পুতুল আগুন পুড়িয়ে তে রঙ হয় তাতেই এগুলো বেশ ভালো লাগে। রানী পুতুল মতো দেখতে এই মন্দাকিনী পুতুল তৈরি করলেন  এখানে এই পালেরা। এদের পুতুল গুলো কিন্তু ভিক্টোরিয়া মতো দেখতে  না।  বরং একটু আধটু বাঙালি মুখ। বোধহয় চপ্পাবতী এরকম দেখতে ছিলো।
জাফর পুরের কাছে গ্রামটি। স্থায়ী মেলাতে বিক্রি হয় সব পুতুল গুলো। আলপনা পাল একা এই পুতুল গুলো বানাচ্ছেন। যোগাযোগ করতে পারেন। করোনা প্রভাবে কাজ বন্ধ করে দেবে ভাবছেন উনি।


রাজ পুরের দোল মঞ্চ

হুসেন শাহের পুত্র গিয়াসুদ্দিন মহম্মদ শাহের ষোড়শ শতাব্দীতে    রাজপুর সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জমিদারি লাভ করেছিলেন   কৃষ্ণদাস দত্ত। রাজপুরের রাজা মদন রায় ছিলেন এই কৃষ্ণদাসের তৃতীয় পুত্র । তাঁর পৌত্র দুর্গাচরণ রাজবাড়িকে সুরক্ষিত করতে পরিখা  নির্মাণ করেছিলেন। গড়িয়া (গড়+ইয়া) স্থানের নামকরণ এসেছে এখান থেকে। দুর্গাচরণের পুত্র রাজবল্লভ কম্পানির সনদে রায়চৌধুরী  উপাধি লাভ করেন। যদিও ইংরেজদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনের জন্য রাজবল্লভ  তাঁর রাজপুর ও হরিনাভি গ্রাম দুটির জমিদারি হারান। এই দুই গ্রামের নিলামে  হয়ে গেলে #বারুইপুর এর কাছারি বাড়িতে চলে আসেন।  এদিকে ইংরেজদের নিমক মহলের দেওয়ান জনার্দন করের পুত্র দুর্গারাম করচৌধুরি ত রাজপুরে জমিদারির কিনে নেন ।
এই করচৌধুরি বংশ ধর ধর্ম পরায়ন ছিলেন। তবে রায়চৌধুরী রা চলে গেলে ও তাদের স্থাপিত মন্দির গুলো  এখানে  এখনো আছে।তাদের প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দির এখনো বর্তমান আছে। আছে রাধাকৃষ্ণ মন্দির । এবং দোল মঞ্চ ও। #রাজপুরের #দোলউৎসব কে অনেক বেশি প্রানবন্ত রঙীন করে তোলে এই দুইশত বছরের বেশি পুরনো মন্দির প্রাঙ্গণ।
#রাজপুরের রাধা কৃষ্ণ, দোল উৎসব অধিবাসীদের কাছে একটি অহংকার।

 আবাক করা বিষয় বহুবছর বছর আগে  এই অঞ্চলের  দুটি মন্দির থেকে ই রাধা কৃষ্ণ বিগ্রহ  চুরি হয়ে গিয়েছিল প্রবাদ- যারা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছিলেন তারা হঠাৎই অনুভব করলেন কৃষ্ণ ও রাধার ওজন ক্রমশ বৃদ্ধি দেবতার গা থেকে আগুনের মতো তাপ বিচ্ছুরিত হয়। তখন সেই মূর্তিটি ভূঁড়িরপুকুরেই ফেলে চলে যান৷ ওই ফেলে দেওয়ার সময়েই কোনো কারনে কৃষ্ণের ডানহাতের কড়ে আঙুলটি ভেঙে যায়৷
ঠিক এই ভাবে বর্তমানে বোসেদের পুজিত এই কৃষ্ণ এর ডান হাত টিও ভেঙে গেছে। রাধা মৃতিটি পাওয়া যায়নি।

 রাজপুরের এক সাধারন মধ্যবিত্ত চৌধুরী পরিবার সপ্নাদেশ পেয়ে ভূঁড়িপুকুরের তলা থেকে তা উদ্ধার করেন৷ দুর্গারাম করের যেহেতু মন্দির ও দোলমঞ্চটি পরিতক্ত, ধ্বংসপ্রায় হয়েপড়েছিল সেহেতু স্থানীয় দক্ষিণপাড়ার চৌধুরী পরিবারেই তিনপুরুষ ধরে রাধাকৃষ্ণ বিগ্রহদুটি রয়েছে৷