গুড়শুটি মেলা কোথায় হয় জানেন???
মেদিনীপুর গুড়সুটি মেলার খুব বিখ্যাত তবে সময় মাত্র কয়েক ঘন্টা।গুড়সুটির পসরা সাজিয়ে একদল বিক্রেতা হাজির হন এই মেলায় ।আসলে মেলায় ঘুরতে আসা শয়ে শয়ে ক্রেতা গুড়সুটি কেনে।
গুড় মাখানো কাঠিগজা - যাকে সবাই 'গুড়সুটি' বলে ডাকেন, তা এই মেলায় প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়। সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত গুড়সুটি কেনার জন্য লোকালয়ের মধ্যের এই ছোট্ট মেলায় ভীষণ ভিড় লেগে থাকে। এই জন্য সকলে এই মেলাকে 'গুড়সুটির মেলা' বলে চেনেন ও ডাকেন। দোলের দ্বিতীয় দিন শুধু মাত্র গুড়সুটির কারণে শহরের তো বটেই শহরের বাইরের দূর দূরান্ত থেকে লোকে এখানে হাজির হন সানন্দে। সবার হাতে ঝুলতে থাকে ব্যাগ। তাতে ভর্তি গুড়সুটি।
এক একজন তো এক দেড় কেজিও কেনেন। মেদিনীপুর শহরের পাটনাবাজার এলাকার সাহেবপুকুর চকে ঠিক দোল পূর্ণিমার দ্বিতীয় দিন এই মেলা বসে। । মেদিনীপুরে আসলে দু'দিন দোল খেলা হয়। আর সেই দ্বিতীয় দোলের দিনে বিকেল হলেই এই মেলা বসে। এই মেলাটি শুরু করেছিলেন সাহেব পুকুর চক এলাকার তৎকালীন বাসিন্দা এক অতি বৃদ্ধা উজ্জ্বলা সাহু। তাঁর পায়ের সমস্যার জন্য লোকে তাঁকে 'নেংড়ি বুড়ি' বলে ডাকতো। জীবনের শেষ বেলায় পৌঁছে তাঁর একমাত্র অবলম্বন ছোট্ট নাড়ুগোপালের জন্য দোলের সময় বিশেষ পুজো করতে গিয়ে এই মেলাটি বসিয়েছিলেন। অনেকে তাই এটিকে "নেংড়ি বুড়ির দোল" বলেও ডাকেন। কালক্রমে মেলাটি জনসাধারণেরস্থানীয়রা জানাচ্ছেন, বহু বছর ধরেই এই মেলা চলছে। আনুমানিক দুশবছর হবে এই মেলার বয়স।
তবে মেলায় আরো একটা আকর্ষণ আছে। পতিঙ্গা নামের খেলনা পাওয়া যায় এখানে।বাঁশের বাখরি চেঁছে এই খেলনাটি তৈরী করা হয়। 'পতঙ্গ' শব্দটি থেকে এসেছে 'পতিঙ্গা'। আকাশের দিকে ছুঁড়ে দিলে ঘুরতে ঘুরতে মাটিতে নেমে আসে। ছোটদের অন্যতম পছন্দের এই খেলনাটি এই মেলাতেই পাওয়া যায় ।
বর্তমানে এই মেলাতে গুড়সুটির পাশাপাশি গুড় মাখানো ছোলা, মালপোয়া, মুগের জিলিপি এমনকি তেলেভাজা, পাঁপড়ভাজা, বারোভাজাও বিক্রি পাওয়া যায়। নানান মানুষের কলরবের সাথে সাথে সন্ধ্যায় দেবতার নামগানে মুখরিত হয়ে ওঠে গোটা মেলা।
No comments:
Post a Comment