Tuesday, 30 November 2021
দারু বিগ্রহ
Monday, 29 November 2021
চীনা মাটির পুতুল
মাটির বাঁশি পুতুল
Sunday, 28 November 2021
ফেনি
Tuesday, 23 November 2021
হিঙ্গুল পুতুল
ছোট্ট আও আও নালিশের সুরে বলল" আমাকে একটা বার্বি ডল কিনে দিলে না তুমি।"মা জিজ্ঞেস করলো "সেটা আবার কি? "আমি বললাম "পুতুল। "মা ছোট বেলায় উনুনে পুড়িয়ে মাটির পুতুল বানিয়ে দিতো । সেই স্মৃতি টা উস্কে দিলো। আমি আমার অনেক কটি পোস্ট বলার চেষ্টা করছি বাংলার বিভিন্ন স্থানে যে পুতুল পাওয়া যায় , তা তৈরিতে আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতি অনেক অবদান আছে। অথচো আধুনিকতার চাপে বাংলার ঘরে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার পুতুল। অথচো পুতুল কেনা বন্ধ করে নি কিন্তু বাঙালী। বাঙালি র ঘরে আসছে,জাপানের তথা বৌদ্ধ ধর্মে দারুমা।দারুমা পুতুল ঐতিহ্যবাহী জাপানি খেলনা পুতুল। এটি ছোট, বৃত্তাকার/গোলাকার, দাড়িওয়ালা মানুষ চিত্রিত, ফাঁপা ও লাল রঙের হয়। তবে অঞ্চল ভেদে দারুমা পুতুলের নকশা, ডিজাইন ভিন্ন হয়। এই পুতুল নাকি সৌভাগ্যে ফেরাবে বাঙালি র।
যাইহোক সোস্যাল মিডিয়ায় বিশিষ্ট পরিচিত নাম সায়ন রায় । সৌভাগ্য ক্রমে আমার ফোন বুকে তাঁর নাম্বার টি সেভ করা। তাঁর status দেখতে পেলাম একটা হারিয়ে যাওয়া পুতুল এর ছবি। এটা বীরভূমের পুতুল, মনে পরে গেলো,সাঁওতালি ঘরনা চাদর বাঁধনী পুতুল,বাঘরাইপুতুল , কিংবা হিঙ্গুলা পুতুল , আজ হারিয়ে যাওয়া র পথে। হিঙ্গুলা পুতুল এর কথা তাই বলতে ইচ্ছে করলো আপনাদের কাছে।পুতুলের নানা ভাগ, কি দিয়ে তৈরি হচ্ছে সেটা দিয়ে বলি সাধারণত আমরা মাটির পুতুল, কাপড়ের পুতুল,কাঠের পুতুল,পাটের পুতুল,তালপাতার পুতুল,গালার পুতুল,ধাতুর পুতুল,কাগজের পুতুল,শোলার পুতুল। এদের মধ্যে একটি বাংলার প্রবাদ প্রবচনে থাকে গেলেও হারিয়ে গেছে বোধহয় আমাদের জীবন থেকে। তালপাতার সিপাই, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলায়এই খেলনা উদ্ভাব। আজও আর দেখা যায় না। তবে আদিবাসী সাঁওতাল দেবতা সিং বোঙ্গার উদ্দেশ্যে তৈরি এই পুতুলের মুখ হয় হাতির মতো।এছাড়াও তালপাতার সেপাই তৈরি হতো তালপাতা দিয়ে। এতে থাকে যোদ্ধার অবয়ব। সেখান থেকে আসতে পারে তাল পাতার সেপাই বানানোর রীতি।
এছাড়া আগেই বলেছি বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান থেকে তৈরি শুরু হয় পুতুল বানানোর রীতি।

হিঙ্গুলা পুতুলের কথায় আসি এবার । কারণ সায়ণ রায়ের স্ট্যাটাসে হিঙ্গুলা পুতুল ছবিই আমি দেখেছি।বাঁকুড়ায় তৈরি হয় হিঙ্গুল রঙের হিঙ্গুলা পুতুল। কাঁচা মাটি দিয়ে তৈরি এইসব পুতুল দুর্গাপুজো, জন্মাষ্টমী ও টুসু পুজোর সময় বিক্রি হয়।ষষ্ঠীপুজো ও জিতাষ্ঠমীর ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে হিঙ্গুল পুতুল কাজে লাগে। কেউ কেউ মানত করার জন্য হিঙ্গুল পুতুল ব্যবহার করে থাকেন। ঘর সাজানোর জন্য অনেকেই কেনেন। হলুদ (হরিতালি), লাল ( হিঙ্গুলা), নীল .ওপর সূক্ষ্ম কাজ, রংবেরঙের কাঠের পুতুল, চমক এর আসল আকর্ষণ। হিঙ্গুল বা হিম এক ধরনের খনিজ পদার্থ। এক সময়ে বিখ্যাত হয় বিষ্ণুপুরের হিঙ্গুল পুতুলগুলো । পুতুল গুলো রাঙিয়ে তুলতে লালচে রঙে এই হিঙ্গুল ।এই রং দিলে বেশ চকচকে হত পুতুলগুলো। এই কারণেই পুতুলগুলোর এমন নাম। কাঁচা মাটিকে হাতে টিপে পুতুলের রূপ দিয়ে রোদে শুকোনো হয়। তাতে পরে ভেষজ রঙের প্রলেপ। পুতুলের উচ্চতা হয় মোটামুটি এক আঙুলের মতো। বাচ্চাদের খেলনা হিসেবেই এই পুতুল জনপ্রিয়। পাশাপাশি, তবে এখন খানিকটা ইউরোপীয় প্রভাব এসে মিশেছে এই পুতুলের সাজসজ্জায়। হিঙ্গুল পুতুলের পরনে থাকে ফ্রক, মাথায় পাশ্চাত্য রীতির টুপিও দেখা যায়।
.এই পুতুল তৈরি শুরু হওয়ার একটি গল্প শোনা যায় যে- যখন রাজবাড়িতে শিল্পী রা রাজাদের জন্য হাতে বানানো তাস নিয়ে যেতেন, তখন রাজবাড়ির শিশু রা তাঁদের কাছে বায়না করে বলতো ‛ আমাদের জন্য কি এনেছো? আমাদের-ও পুতুল দিতে হবে।’... তখন শিল্পীদের স্ত্রী রা মাটির ছোটো ছোটো পুতুল বানিয়ে রাজবাড়ির শিশুদের জন্য নিয়েযেতো।....
যাইহোক এর পরে চাদর বাঁধনী পুতুলের কথা বলবো কারণ এর সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস ।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
কৃতজ্ঞতা জানাই - সায়ন রায় কে , ছোট্ট বয়সে ও অনেক কাজ করেছেন , ওর উৎসাহে পুতুল নিয়ে এই লেখা শুরু করলাম।
হরিনাভি
Monday, 22 November 2021
বাবু পুতুল
ছলনের পুতুল
Sunday, 21 November 2021
চদর বদর পুতুল
Saturday, 20 November 2021
শিবের মুখোশ
কাঠালিয়া পুতুল
মুর্শিদাবাদের কাঠালিয়াতে পুতুলের মুখ তৈরি হয় ছাঁচে, দেহ তৈরি হয় কুমোরের চাকে। খড়ির সঙ্গে অভ্র মিশিয়ে চকচকে করা হয় পুতুলগুলি। তারপর রোদে শুকিয়ে লাল-কালো ডোরাকাটা রঙ করা হয়। চোখ মুখ আঁকা হয়।কাঁঠালিয়ার কুমোরেরা তৈরি করেন গ্রাম জীবনের অন্দরমহলের নানা দৃশ্য,যেমন-জাঁতা পেশাইরত মহিলা,গয়লানি,খোঁপা বাঁধা ইত্যাদি। এই সব পুতুলের দেহটা নির্মিত হয় চাকে, মুখটা তৈরি হয় ছাঁচে,হাত-পা ও অন্যান্য অংশ তৈরি হয় হাতে।
বাংলা র শৈশব একটা নিজেস্য বৈশিষ্ট্য ছিলো আগে , খেলানাতেও ছিলো শিল্পের ছোয়া । যেমন টেপা পুতুল।মাটি দিয়ে কুমোরর তৈরি একটি উল্লেখযোগ্য শিল্পকর্ম হলো টেপা পুতুল। নরম এঁটেল মাটি দিয়ে হাতের নৈপুণ্য হাত দিয়ে টিপে তৈরি করে বলে এ পুতুলকে টেপা পুতুল বলে। মাটির বুটি দিয়ে বা কাঠির রেখা টেনে এ পুতুলের অলংকার ও পোশাকের আভাস ফুটিয়ে তোলা হয়। পরে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। শুকানো হয়ে গেলে পোড়ানো হয় আগুনে।
সাধারণত বাচ্চাদের খেলনাসামগ্রী হিসেবে টেপা পুতুল বানানো হয়। উল্লেখযোগ্য কিছু খেলনা পুতুল হলো বউ-জামাই, কৃষক, নথ পরা বউ। শৌখিন ব্যক্তিরা গৃহসজ্জার জন্য এ পুতুল সাজিয়ে রাখেন। গ্রামবাংলার মেলায় টেপা পুতুলের দেখা মেলে এখনো। বর্তমানে শহুরে মেলায়ও এ পুতুল দেখা যায়।পুতুল। ছাঁচে ফেলে পুতুল সাথে এর পার্থক্য আছে হাতের নৈপুণ্য ও কারিগরি জ্ঞানের মাধ্যমে টিপে টিপে এই পুতুল তৈরি হয় এটি।টেপা পুতুল বাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। কবে, কোথায় এ পুতুল বানানাে শুরু হয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশে মূলত মেয়েরাই টেপা পুতুল তৈরি করতো প্রথম দিকে। পুতুলের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ হাতের সাহায্যেই গড়ে তােলা হয় মাটি দিয়ে।
এখন এই ঐতিহ্য বিলুপ্তির পথে? একটা কারণ, চাহিদা কমেছে। শৌখিন পুতুলের সঙ্গে লড়াইয়ে অনেক দিন ধরে হারছে মাটির পুতুল। মেলা, হাটে রমরমা কমেছে। সেখানে মাটির পুতুলের চাহিদা প্রায় নেই বললেই চলে। মাটিরও অভাব। এখন মাটি কিনতে হয়। দাম বেশি পড়ে। শুধু পুতুল নয়, মাটির তৈরি অন্য জিনিসপত্রের চাহিদা কমেছে। মুর্শিদাবাদের হাতে টেপা পুতুল বেশ জনপ্রিয়৷ প্রথমে পুতুল তৈরির মাটিটা তৈরি করে তাকে হাত দিয়ে প্রয়োজনমতো নানান আকার দেওয়া হয়৷ আঙ্গুলের সাহায্যে লম্বা গোল নানান শেপ তৈরি করা হয়৷ মুর্শিদাবাদের কাঁঠালিয়া, পাঁচমোরাতে এই হাতে টেপা পুতুল তৈরি করা হয়৷ এইসব পুতুলে উঠে আসে গ্রামীণ সমাজ জীবনের চিত্র৷
এটি বাংলার সব থেকে প্রাচীন পুতুল বলে দাবি করতে পারেন। রাজা শশাঙ্ক এর সময় থেকে তৈরি হতো এই পুতুল। কারণ কর্নসুবর্ণথেকে এরকম পুতুল পাওয়া গেছিলো। তাইরাজা শশাঙ্কের আমল থেকেই এই পুতুলের আবির্ভাব বলে অনেকে মনে করেন । তবে রাজা শশাঙ্কও পোড়া মাটির পুতুল কে সংস্কৃতির একটি অঙ্গ হিসেবে মনে করেছিলেন কারণ শুধু মাটির পুতুল নয় , মাটির বাসন , এছাড়াও সেই সময়ে অনেক বড় বড় প্রসাদ , মন্দির গাত্রেও পোড়ামাটির কাজ দেখতে পাওয়া যায় । তিনি মৃৎ শিল্পকে গুরুত্ব দিয়ে ছিলেন।
তাই এই পুতুলকে প্রাচীন কালের ঘরানা বলে মনে করা যেতেই পারে।
কাঠালিয়া পুতুলে সমজের বিভিন্ন চরিত্রকে খুঁজে পাওয়া যায় । যেমন গোয়ালিনী , সন্তান কোলে এক মা , মেয়েদের একে ওপরের মাথার উকুন বাছা, বাচ্চাকে পায়ে শুইয়ে তেল মাখানো , দারোগা বাবু ,আরো বিভিন্ন রকমের ।